খুশি মনে আনুগত্য মেনে যে কাজ হয় সেই কাজকেই ইবাদত বলে। ইসলামি পরিভাষায়, আল্লাহ্র আনুগত্য মেনে যে কাজ হয়, সেটাকে আল্লাহ্র ইবাদত বলে

চতুর্থ হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ ভাষাবিদ ও অভিধান প্রণেতা হুসাইন আহমদ ইবনু ফারিস (মৃত্যু ৩৯৫ হিজরী) তার বিখ্যাত গ্রন্থ “মাকায়িস আল-লুগাহ” তে এই শব্দের সংজ্ঞাতে লিখেনঃ

 (عَبَدَ) الْعَيْنُ وَالْبَاءُ وَالدَّالُ أَصْلَانِ صَحِيحَانِ، كَأَنَّهُمَا مُتَضَادَّانِ، وَ [الْأَوَّلُ] مِنْ ذَيْنِكَ الْأَصْلَيْنِ يَدُلُّ عَلَى لِينٍ وَذُلٍّ، وَالْآخَرُ عَلَى شِدَّةٍ وَغِلَظٍ। 

আবদ (عبَدَ) শব্দের অক্ষর 'ع' (আইন), 'ب' (বা), এবং 'د' (দাল) দিয়ে গঠিত শব্দটির মধ্যে দুটি মূল একসাথে আছে, কিন্তু মূল দুটি পরস্পর বীপরিত মনে হলেও এই দুটি এক সাথে মিলে ইবাদতের অর্থ তৈরি করেপ্রথম মূল শব্দটি নরম ও নম্রতার ধারণা প্রকাশ করে, আর দ্বিতীয়টি কঠোরতা নির্দেশ করে।

তাই বলা হয়, প্রথম মূলটি স্বেচ্ছায় আনুগত্য মেনে নেওয়ার ধারণা বোঝায়, আর দ্বিতীয়টি কঠোর কাজ বোঝায় আর স্বেচ্ছায় আনুগত্য অনুযায়ী যে কাজটি কঠোরভাবে পালন করা হয়, সে কাজকে ইবাদত বলে। 

দ্বিতীয় হিজরী শতকের প্রসিদ্ধ ভাষাবিদ, পৃথিবী  সর্বপ্রথম অভিধান প্রণেতা ও এরাবিক মাখরাজের জনক আল খলিল (রহিমাহুল্লাহ) (১০০ -১৭০ হি) তার বিখ্যাত অভিধান কিতাব আল আইনে বলেন -"আল-আবদ" (العبد) হলো মানুষ, পৃথিবীতে সে হতে পারে স্বাধীন বা কারো অধীন (কিন্তু সে কারো না কারো দাস)। 

আল-আবদ" (العبد) দুই রকমের হতে পারে: 

 সে আল্লাহ ছাড়া কারো আনুগত্য মেনে কাজ করে না। 

অথবা

তার মন যখন যার আনুগত্যের ব্যাপারে সায় দেয়, সে তার আনুগত্য  মেনে নিয়ে কাজ করে। 

তিনি আরও বলেন-সাধারণ জনগণ আবাদুল্লাহ (عباد الله) এবং আল-আবদ (العبيد) এর মধ্যে পার্থক্য নির্ধারণ করেছে। 

عباد الله (আবাদুল্লাহ): যারা স্বেচ্ছায় শুধুমাত্র আল্লাহর আনুগত্য করে কাজ করে। [এ বিষয়ে আয়াত

পাবেন - আল-ইনসান ৭৬:৬, সুরা ফুরকান ২৫:৬৩] 

আর, العبيد (আল-আবদ): যারা স্বেচ্ছায় কখনো আল্লাহ আবার কখনো অন্য কারো আনুগত্য মেনে কাজ করে। হতে পারে মন, হতে পারে সরকার, বাবা-মা, ধর্মীয় আলেম, তাগুত, নেতা অথবা বন্ধুর। [রেফারেন্স আয়াত পাবেন

সুরা ইয়াসিন ৩৬:৬০, সুরা ফুরকান ২৫:৪৩, সুরা আস-সাফফাত ৩৭:২২-২৩] 

পৃথিবীতে এই দুটি শ্রেণির বাইরে কোনো মানুষ নেই; প্রতিটি মানুষ এই দুই শ্রেণির যে কোনো একটিতে অন্তর্ভুক্ত হবে। 

তাহলে, ইবাদত কাকে বলে?

 মানুষ ও জীন আনুগত্য মেনে যে কাজটা করে সে কাজকে ইবাদত বলে।

মানুষ যদি শুধুমাত্র আল্লাহর আনুগত্য মেনে কাজ করে, সে আল্লাহর ইবাদত করল অর্থাৎ সে আব্দুল্লাহ।

আর মানুষ বা জীন   যদি  মন সহ অন্য কারো আনুগত্য মেনে কাজ করে, সে অন্য কারো ইবাদত করল অর্থাৎ সে অন্য কারো আবদ।

উপরের আলোচনা থেকে স্পষ্ট, ইবাদত এর  মূল ধারণাটি দুটি অংশে বিভক্ত: প্রথমটি হলো আনুগত্য এবং তারপরেরটি হলো কাজ। অর্থাৎ, ইবাদত বলতে এমন কাজকে বুঝায় - যা সম্পাদিত হয় স্বেচ্ছায়  কারো বা কোন কিছুর আনুগত্য করে।

এখন, যদি আপনি আনুগত্য মানেন না কিন্তু বাধ্য হয়ে কোনো কাজ করেন, তাহলে সেটি ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না। আর যদি আপনি শুধুমাত্র আনুগত্য মেনে নেন কিন্তু তার অনুরূপ কাজ করেন না, তাও ইবাদত হবে না। সুতরাং, ইবাদত বলতে যা বুঝানো হয় তা হলো:

ইবাদত = আনুগত্য মেনে নেয়া + সে অনুযায়ী কাজ করা।

এই সংজ্ঞা অনুযায়ী, প্রকৃত ইবাদত তখনই হয় যখন কেউ আন্তরিকভাবে আনুগত্য স্বীকার করে এবং তার পর সেই আনুগত্য অনুযায়ী কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

আল্লাহ বলেন-

اَلَمْ اَعْهَدْ اِلَيْكُمْ يٰبَنِيْۤ اٰدَمَ اَنْ لَّا تَعْبُدُوا الشَّيْطٰنَ   اِنَّهٗ لَكُمْ عَدُوٌّ مُّبِيْنٌ ۙ

"হে বনী আদম, আমি কি তোমাদেরকে এ মর্মে নির্দেশ দিইনি যে, ‘তোমরা শয়তানের ইবাদত করো না। নিঃসন্দেহে সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু’?" (সূরা ইয়াসিন ৩৬:৬০)

আমরা আল্লাহর ইবাদতের কথা জানি। এখন প্রশ্ন হলো, শয়তানের ইবাদত কেমন করে করা হয়? আল্লাহ রোজা রাখার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু যদি কোনো ব্যক্তি শয়তানের প্ররোচনায় রোজা না রাখেন, তাহলে তিনি শয়তানের ইবাদত করছেন।

আনুগত্য যার, ইবাদত হয়ে যায় তার জন্য যদি কেউ শয়তানের কথা শুনে লোক দেখানোর জন্য নামাজ পড়ে, তাহলে তার ইবাদত শয়তানের জন্য হয়ে যাবে।

একটা আয়াত এবং তার সাথে সম্পর্কযুক্ত একটা হাদিস বলি, তাহলে বুঝতে আরো সহজ হবে-

مَنْ كَفَرَ بِاللّٰهِ مِنْۢ بَعْدِ اِيْمَانِهٖۤ اِلَّا مَنْ اُكْرِهَ وَقَلْبُهٗ مُطْمَئِنٌّۢ بِالْاِيْمَانِ وَلٰكِنْ مَّنْ شَرَحَ بِالْكُفْرِ صَدْرًا فَعَلَيْهِمْ غَضَبٌ مِّنَ اللّٰهِ ۚ وَلَهُمْ عَذَابٌ عَظِيْمٌ

যে ঈমান আনার পর আল্লাহর সাথে কুফরী করেছে এবং যারা তাদের অন্তর কুফরী দ্বারা উন্মুক্ত করেছে, তাদের উপরই আল্লাহর ক্রোধ এবং তাদের জন্য রয়েছে মহাআযাব। ঐ ব্যক্তি ছাড়া যাকে বাধ্য করা হয় (কুফরির ঘোষনা দিতে অথবা জালেমদের মর্জি অনুযায়ী কাজ করতে) অথচ তার অন্তর থাকে ঈমানে পরিতৃপ্ত।

An-Nahl 16:106

আম্মার ইবনে ইয়াসির(রা.) চোখের সামনে তাঁর পিতা ও মাতাকে কঠিন শাস্তি দিয়ে দিয়ে শহীদ করা হয়। তারপর তাঁকে এমন কঠিন অসহনীয় শাস্তি দেয়া হয় যে, শেষ পর্যন্ত নিজের প্রাণ বাঁচাবার জন্য তিনি কাফেরদের চাহিদা মত সবকিছু বলেন। এরপর তিনি কাঁদতে কাঁদতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের খেদমতে হাযির হন এবং আরয করেনঃ

يَا رَسُولَ اللهِ مَا تُرِكتُ حَتَّى سَبَبتُكَ وَذَكَرتُ اَلِهَتَهُم بِخَيرٍ

হে আল্লাহর রসূল! আমি আপনাকে মন্দ এবং তাদের উপাস্যদেরকে ভাল না বলা পর্যন্ত তারা আমাকে ছেড়ে দেয়নি।”

রসূলুল্লাহ জিজ্ঞেস করলেন, كَيفَ تَجِدُ قُلبَكَ ؟তোমার মনের অবস্থা কি?” জবাব দিলেন, مُطمَئِنَّا بِالِايمَانِঈমানের ওপর পরিপূর্ণ নিশ্চিন্তে।” একথায় নবী বললেনঃ اِن عَادُوا فَعُد “যদি তারা আবারো এ ধরনের জুলুম করে তাহলে তুমি তাদেরকে আবারো এসব কথা বলে দিয়ো।” [সুনান আবু দাউদ, সুনান আল বায়হাকি ]

এইখান থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, আনুগত্য না মেনে কোন কাজ করলে তা ইবাদত হবে না কেননা, পরিস্থিতির মুখে কুফরির ঘোষণা দিলেও, ইবাদতের সংজ্ঞা থেকে স্পষ্ট ইবাদত হতে হলে যে কাজটা করা হয় তা আনুগত্য মেনে করতে হয়

তাগুত: তাগুত হল সে – যে আল্লাহর আদেশের বিরুদ্ধে গিয়ে অবাধ্যতার সীমা অতিক্রম করে। অর্থাৎ দিনের পর দিন তার অবাধ্যতা প্রকাশ করে যেমনঃ নিষ্ঠুর শাসক।

তাহলে, যারা নিজে আল্লাহর আনুগত্য করে না এবং অন্যদেরও আল্লাহর আনুগত্য করতে নিষেধ করে, তাদেরকে তাগুত বলা যায়

ধরুন, একটি দলের সভাপতি/নেতা। তার  অধীনস্থ নেতাদেরকে বলল, "তোমরা তোমাদের কর্মীবাহিনী নিয়ে মানুষের উপর জুলুম করো, তাদের জমি দখল করে নাও।" আর নেতাকর্মীরা তাই করলো, যা সে নির্দেশ দিয়েছিল। দিনের পর দিন সে এই নিষ্ঠুরতা চালিয়ে যাচ্ছিল।

اُحْشُرُوا الَّذِيْنَ ظَلَمُوْا وَاَزْوَاجَهُمْ وَمَا كَانُوْا يَعْبُدُوْنَ ۙ

"জালেমদেরকে, তাদের সহযোগীদের (নেতা-কর্মীদের) এবং আল্লাহ ব্যতীত যারা তাদের আনুগত্য করেছিল, তাদের একত্রিত করো; তারপর তাদেরকে জাহান্নামের পথে নিয়ে যাও।" (সূরা আস-সাফফাত ৩৭:২২-২৩)

·        এখানে, সভাপতি হচ্ছে তাগুত, কারণ তিনি আল্লাহর আদেশের বিপরীতে গিয়ে বার বার অন্যায় কাজের আদেশ দিয়েছেন এবং  মানুশজন তার ইবাদত করেছে

·        যারা তার আদেশ পালন করেছে, তারা জালেম।

·        যারা জুলুম করতে সহযোগিতা করেছে, তারা জালেমের সাহায্যকারী।

এই তিন গ্রুপের স্থান হল জাহান্নাম।

যেখানে আল্লাহর আদেশ আছে, সেখানে আল্লাহর আনুগত্য মেনে নিয়ে সে অনুসারে কাজ করতে হবে, ঠিক যেমন রাসূলরা করেছেন। যদি আপনি আল্লাহর নির্দেশ অনুসারে কাজ করেন, তাহলে আপনি আল্লাহর ইবাদত করছেন।

আর যদি আপনি আপনার মনের আনুগত্য, নেতার আনুগত্য অথবা পূর্বপুরুষের আনুগত্য মেনে নিয়ে কাজ করেন, তাহলে মূলত আপনি যার আনুগত্য করছেন, তারই ইবাদত করছেন।

মুসলমানদের ও অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আমরা মসজিদে গিয়ে সিজদাহ দিই, তারা তাদের মন্দিরে মূর্তির সামনে সিজদাহ দেয় অথবা মাথা নত করে। পার্থক্য হচ্ছে, আমরা যেটা করি, তার প্রমাণ কুরআনে আছে। আর তারা যেটা করে, তাদের প্রধান ধর্মগ্রন্থে সেই কাজ করার নির্দেশনা আছে কিনা, সেটা প্রশ্ন করা উচিত।

وَيَعْبُدُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ مَا لَمْ يُنَزِّلْ بِهٖ سُلْطٰنًا وَّمَا لَيْسَ لَهُمْ بِهٖ عِلْمٌ ؕ وَمَا لِلظّٰلِمِينَ مِنْ نَّصِيرٍ

"আর তারা আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুর ইবাদত করে, যার জন্য আল্লাহ কোনো প্রমাণ নাযিল করেননি এবং যার ব্যাপারে তাদেরও কোনো জ্ঞান নেই। আর যালিমদের কোনো সাহায্যকারী নেই।" (সূরা আল-হজ্জ ২২:৭১)

এখন, যদি আপনি কুরআনে বলা হয়নি এমন কিছু ইবাদত হিসেবে গ্রহণ করে করেন, তাহলে সেটা আল্লাহর ইবাদত হবে না, বরং আপনার মন বা যার কথা অনুসারে করছেন, তার ইবাদত হবে।

আরেকটি উদাহরণ দিই: রোজা তো ইবাদত, তাহলে ইদের দিনে রোজা রাখা হারাম কেন?

ইবাদত মূলত সেটাই, যা আল্লাহ যেভাবে করতে বলেছেন, তা করা। যদি আপনি নিজের মনের মতো কিছু করেন, তাহলে সেটা আপনার মনের ইবাদত হবে।

তাহলে, আমরা কোনো শাসক, নেতা, বাবা-মা, অফিস বস অথবা জীবনসঙ্গীর আনুগত্য করতে পারি না। শুধু আল্লাহর আনুগত্য করতে হবে, যা তিনি নির্দেশ দিয়েছেন।

وَالَّذِينَ اجْتَنَبُوا الطَّاغُوتَ أَنْ يَعْبُدُوهَا وَأَنَابُوا إِلَى اللَّهِ لَهُمْ الْبُشْرَىٰ ۚ فَبَشِّرْ عِبَادِي

"আর যারা তাগুতের ইবাদত পরিহার করে এবং আল্লাহর দিকে ফিরে আসে, তাদের জন্য রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, আমার বান্দাদেরকে সুসংবাদ দাও।" (সূরা আয-যুমার ৩৯:১৭)

তাহলে, মনে রাখতে হবে: ইবাদত একটি আরবি শব্দ। রাসূলের জন্মের আগেও মানুষ এই শব্দটি ব্যবহার করত। এর অর্থ হলো আনুগত্য মেনে কাজ করা।

ইবাদত যে কাউকে যে কেউ করতে পারে। কিন্তু এক আল্লাহর ইবাদত হল—আল্লাহ কুরআনে যা করতে বলেছেন, তা করা এবং যা নিষেধ করেছেন, তা থেকে বিরত থাকা।

উপরের আলোচনা অনুযায়ী, মানুষ বিভিন্নভাবে ইবাদত করতে পারে, যা নীচে উল্লেখিত:

মনের ইবাদত:

    • যদি কেউ আল্লাহর আদেশ মেনে না চলেই নিজের মনোভাব অনুসারে কাজ করে, তাহলে তার সেই কাজ আসলে তার মনেরই ইবাদত হবে, আল্লাহর নয়।

শাসক/সরকারের ইবাদত:

    • যদি কেউ শাসক বা সরকারের নির্দেশ অনুসারে কাজ করে যা আল্লাহর নির্দেশের বিপরীতে, তাহলে তার সেই কাজ শাসকের ইবাদত হবে, আল্লাহর নয়।

নেতার ইবাদত:

    • যদি কেউ নেতার আদেশ পালন করে যেটি আল্লাহর নির্দেশনার বিরুদ্ধে, তাহলে তার সেই কাজ নেতার ইবাদত হবে, আল্লাহর নয়।

অন্যদের ইবাদত:

    • যদি কেউ তার বাবা-মা, অফিস বস, অথবা জীবনসঙ্গীর আদেশ পালন করে, যা আল্লাহর আদেশের সাথে সাংঘর্ষিক, তাহলে তার সেই কাজ ঐ ব্যক্তিদের ইবাদত হবে, আল্লাহর নয়।

সংক্ষেপে, ইবাদত শুধুমাত্র আল্লাহর আদেশ মেনে চলার মাধ্যমে করা উচিত। অন্য কারো আদেশ যদি আল্লাহর আদেশের বিরোধী হয়, তাহলে সেটি আল্লাহর ইবাদত হিসেবে গণ্য হবে না। আমাদের সমস্ত আনুগত্য ও ইবাদত আল্লাহর জন্য হওয়া উচিত, যেমনটি কোরআনে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন

নোটঃ প্রশ্ন হলো, মানুষ মানুষকে যে দাস বানায় বা আগে যে দাস প্রথা প্রচলিত ছিল, তাদেরকে কি আল্লাহ মানুষের দাস বলেছে

দুনিয়ার চোখে যারা স্বাধীন না অথবা যারা কারো অধীনে আছে বা দাস, তাদেরকে আল্লাহ পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন—“মা মালাকাত আইমানুকুম” অর্থাৎ যারা তোমাদের অধীনে আছে। (আন-নিসা ৪:৩৬, আন-নাহল ১৬:৭১)। 

কুরআনে আল-আবদ (العبد) শব্দটি আমরা প্রচলিত যে দাস-দাসী বুঝি, সে অর্থে একবারও ব্যবহার হয়নি। 

"আল-আবদ" (العبد) এর যে ধারণা, সেখানে জোর করে কাউকে দিয়ে কিছু করানোর বিষয়টা নেই। আবদ সবসময় স্বেচ্ছায় ও স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করে।

আর, "মা মালাকাত আইমানুকুম" যারা, তারা স্বাধীন না হওয়ায় তাদের হিসাব আলাদা। তারাও "আল-আবদ" (العبد), কিন্তু তারা কারো না কারো অধীনে থাকে। এই কারণে কুরআনে শাস্তির বিধান যারা “মা মালাকাত আইমানুকুম,” তাদের জন্য ভিন্ন, ক্ষেত্রবিশেষে অর্ধেক। (এই বিষয়ে আয়াত পাবেন আন-নিসা ৪:২৫)।

By Md. Ayub Ali October 10, 2024