নফস, কলব এবং রুহ

Abu Nayeem
-
-
AN@gmail.com

নফস, কলব এবং রুহ:

وَاَمَّا مَنْ خَافَ مَقَامَ رَبِّهٖ وَنَهَي النَّفْسَ عَنِ الْهَوٰي ۙ

فَاِنَّ الْجَنَّةَ هِيَ الْمَاْوٰيhttps://qurandictionary.org/links/create ؕ

পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে দন্ডায়মান হওয়াকে ভয় করেছে এবং খেয়াল-খুশী থেকে নিজের নফসকে নিবৃত্ত রেখেছে,নিশ্চয় জান্নাত হবে তার আবাসস্থল।

An-Nazi'at 79:40-41

 

বুঝা গেল, জান্নাতে জাওয়ার জন্য নফসকে নিবৃত্ত করা দরকার। তাহলে নফস কি জিনিস?

আল্লাহ বলেন-

وَنَفْسٍ وَّمَا سَوّٰىهَا ۪ۙ فَاَلْهَمَهَا فُجُوْرَهَا وَتَقْوٰىهَا ۪ۙ قَدْ اَفْلَحَ مَنْ زَكّٰىهَا ۪ۙ وَقَدْ خَابَ مَنْ دَسّٰىهَا ؕ

শপথ নফসের এবং তাঁর, যিনি তাকে সুঠাম করেছেন।অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন,যে তাকে (নফসকে) পবিত্র করে সে সফল হয়; এবং সে ব্যর্থ হয়েছে, যে তা (নাফস)-কে কলুষিত করেছে।

Ash-shams 91:7-10

 

শরীরের যে অংশটা অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান রাখে সেটাই নাফস।

যেমন: নফসের লোভ আছে। আল্লাহ বলেন-

وَالَّذِيْنَ تَبَوَّؤُ الدَّارَ وَالْاِيْمَانَ مِنْ قَبْلِهِمْ يُحِبُّوْنَ مَنْ هَاجَرَ اِلَيْهِمْ وَلَا يَجِدُوْنَ فِيْ صُدُوْرِهِمْ حَاجَةً مِّمَّاۤ اُوْتُوْا وَيُؤْثِرُوْنَ عَلٰۤي اَنْفُسِهِمْ وَلَوْ كَانَ بِهِمْ خَصَاصَةٌ ؕ۟  وَمَنْ يُّوْقَ شُحَّ نَفْسِهٖ فَاُولٰٓئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ ۚ

(তাদের জন্যও) যারা এই মোহাজেরদের আগে এ নগরীতে (মদীনায়) বসবাস করেছে ও ঈমান এনেছে (অর্থাৎ আনসারদের জন্যও)। তাদের কাছে যারা হিজরত করে এসেছে তারা তাদেরকে ভালবাসে; তাদেরকে  যা দেওয়া হয়েছে তার জন্য তারা নফসে কোন চাহিদা পোষণ করে না এবং নিজেরা অভাবগ্রস্ত হলেও নিজেদের ওপর (তাদেরকে) অগ্রাধিকার দেয়। আর নফসের কার্পণ্য থেকে যারা নিজেদেরকে মুক্ত রেখেছে তারাই সফলকাম।

Al-Hashr 59:9

 

কুরনে নফসের ৩ টা অবস্থা এর কথা বলা আছে-

১. নফসে লাওয়ামাহ- নফস যখন নিজেকে দোষী করে ধিক্কার জানায়, সে অবস্থাকে নফসে লাওয়ামাহ বলে।

وَلَاۤ اُقْسِمُ بِالنَّفْسِ اللَّوَّامَةِ ؕ

আরও শপথ করি সেই নফসের, যে নিজেকে ধিক্কার দেয়-

Al-Qiyamah 75:2

 

২. Nafs al-Ammarah বিল-শু:  নফস যখন নিজেকে কোন মন্দ কাজের নির্দেশ দেয়সে অবস্থাকে বলে- Nafs al-Ammarah বিল-শু।

 

وَمَاۤ اُبَرِّيٴُ نَفْسِيْ ۚ اِنَّ النَّفْسَ لَاَمَّارَةٌۢ بِالسُّوْٓءِ اِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّيْ ؕ اِنَّ رَبِّيْ غَفُوْرٌ رَّحِيْمٌ

আর আমি আমার নাফ্সকে পবিত্র মনে করি না, নিশ্চয় নাফ্স মন্দ কজের নির্দেশ দিয়ে থাকে, আমার রব যাকে দয়া করেন সে ছাড়া। নিশ্চয় আমার রব ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’।

Yusuf 12:53

 

৩.Nafs আল-মুত্মা'ইন্নাহ: মুমিনের নফস আল্লাহর ব্যপারে সবসময় সন্তুষ্ট থাকে, আল্লাহর প্রতি নফসের এই অবস্থানকে Nafs আল-মুত্মা'ইন্নাহ বলে।

يٰۤاَيَّتُهَا النَّفْسُ الْمُطْمَئِنَّةُ ۖ

(আর পুণ্যবান ব্যক্তিকে বলা হবে,) “হে প্রশান্ত নফস।

Al-Fajr 89:27

 

আল্লাহ আরো বলেন-

لَا تَجِدُ قَوْمًا يُّؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ يُوَآدُّوْنَ مَنْ حَآدَّ اللّٰهَ وَرَسُوْلَهٗ وَلَوْ كَانُوْۤا اٰبَآءَهُمْ اَوْ اَبْنَآءَهُمْ اَوْ اِخْوَانَهُمْ اَوْ عَشِيْرَتَهُمْ ؕ  اُولٰٓئِكَ كَتَبَ فِيْ قُلُوْبِهِمُ الْاِيْمَانَ وَاَيَّدَهُمْ بِرُوْحٍ مِّنْهُ ؕ  وَيُدْخِلُهُمْ جَنّٰتٍ تَجْرِيْ مِنْ تَحْتِهَا الْاَنْهٰرُ خٰلِدِيْنَ فِيْهَا ؕ  رَضِيَ اللّٰهُ عَنْهُمْ وَرَضُوْا عَنْهُ ؕ  اُولٰٓئِكَ حِزْبُ اللّٰهِ ؕ  اَلَاۤ اِنَّ حِزْبَ اللّٰهِ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ 

Al-Mujadila 58:22

তুমি পাবে না এমন জাতিকে যারা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমান আনে, বন্ধুত্ব করে তার সাথে যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরোধীতা করে, যদিও তারা তাদের পিতা, অথবা পুত্র, অথবা ভাই, অথবা জ্ঞাতি-গোষ্ঠী হয়। এরাই, যাদের অন্তরে আল্লাহ ঈমান লিখে দিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষ থেকে রূহ দ্বারা তাদের শক্তিশালী করেছেন। তিনি তাদের প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতসমূহে যার নিচে দিয়ে ঝর্ণাধারাসমূহ প্রবাহিত হয়। সেখানে তারা স্থায়ী হবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট হয়েছে। এরাই আল্লাহর দল। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর দলই সফলকাম।

 

যুদ্ধে অগ্রগামী সাহাবীরা যেমন আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট ছিল, মুমিনরাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকে।

 

আর, আমরা অনেকে মনে করি, রুহ মারা যায়, রুহ আল্লাহর কাছে চলে যায় কিন্তু কুরানের ভাষায় মারা যায় হচ্ছে নফস, আর আল্লাহর কাছে ফিরে যায়ও নফস।

 

আর, রুহ হচ্ছে আল্লাহর আদেশ-

আল্লাহ বলেন-

وَيَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الرُّوْحِ ؕ قُلِ الرُّوْحُ مِنْ اَمْرِ رَبِّيْ وَمَاۤ اُوْتِيْتُمْ مِّنَ الْعِلْمِ اِلَّا قَلِيْلًا

 

আর তারা তোমাকে রূহ সম্পর্কে প্রশ্ন করে। বল, ‘রূহ আমার রবের কাছ থেকে আদেশ।

Al-Isra' 17:85

 

এই জন্য আল্লাহ কুরানের মাধ্যমে যে আদেশ পাঠাইছেন সেগুলোকে রুহ বলা হয়।

 

وَكَذٰلِكَ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ رُوْحًا مِّنْ اَمْرِنَا ؕ  مَا كُنْتَ تَدْرِيْ مَا الْكِتٰبُ وَلَا الْاِيْمَانُ وَلٰكِنْ جَعَلْنٰهُ نُوْرًا نَّهْدِيْ بِهٖ مَنْ نَّشَآءُ مِنْ عِبَادِنَا ؕ  وَاِنَّكَ لَتَهْدِيْۤ اِلٰي صِرَاطٍ مُّسْتَقِيْمٍ ۙ

 

এভাবেই আমি তোমার কাছে আমার আদেশের থকে রুহ ( কুরআন) পাঠিয়েছি। (এর আগে) তুমি তো জানতে না, কিতাব কি আর ঈমান কি। তবে আমি একে (এই কোরআনকে) একটি আলো করেছি, যার সাহায্যে আমি আমার বান্দাদের মধ্যে যাকে চাই পথ দেখাই। তুমি তো (মানুষকে) সরল পথই প্রদর্শন করছ;

Ash-Shura 42:52

 

নফস হচ্ছে আপনার শরীর যেটা চায়। অর্থাৎ আপনি নিজ স্বাধীন সওা, নিজেকে যে আদেশ দেন সেটি।

আর, রুহ হচ্ছে- আল্লাহ তার সৃষ্টিকে গাইডলাইন হিসাবে যে আদেশ দিয়েছেন সেটি।

 

Qalb is changing / Alternating.

 

নফস হচ্ছে আপনি নিজেকে নিজে কি আদেশ দিচ্ছেন, আর রুহ হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে আদেশ। এখন, আপনি কখন কোনটার আনুগত্য মানবেন, সেটা সিদ্ধান্ত নিবে কলব।

এই জন্য, কলব পরিবর্তন শীল। সে এক এক সময় দেখা যায়, এক এক জনের আনুগত্য করে।  যাদের, কলব নষ্ট হয়ে গেছেএরা আল্লাহর আদেশ না মেনে নফসের ভালো খারাপের দিক নির্দেশনা অনুযায়ী চলে।

 

Extra Note: People replaced quran message and wisdom with its sound. But, the sounds or recitation is the gateway the first step toward  of its contemplation,  not to conclusion.

নফস, কলব এবং রুহ